Varendra Research Museum(বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর)
বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর
রাজশাহী শহরে স্থাপিত বাংলাদেশের প্রথম জাদুঘর। এটি প্রত্ন সংগ্রহে সমৃদ্ধ। এই প্রত্ন সংগ্রহশালাটি ১৯১৩খ্রিস্টাব্দে ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্থাপিত হয়েছিল। বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এটি পরিচালনা করে থাকে।
ইতিহাস
বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর রাজশাহী মহানগরের
কেন্দ্রস্থল হেতেম খাঁ-তে অবস্থিত। এটি বাংলাদেশেরপ্রথম জাদুঘর। প্রত্নতত্ত্ব সংগ্রহের দিক
থেকে এটি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সংগ্রহশালা। বরেন্দ্র জাদুঘর
প্রতিষ্ঠায় নাটোরের দিঘাপাতিয়া রাজপরিবারের জমিদার শরৎ কুমার
রায়,
আইনজীবীঅক্ষয়কুমার মৈত্রেয় এবং রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল এর শিক্ষক রামপ্রসাদ
চন্দ্রের উল্লেখযোগ্য আবদান রয়েছে। ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে তারা বাংলার ঐতিহ্য ও
নিদর্শন সংগ্রহ ও সংরক্ষণের জন্যবরেন্দ্র অনুসন্ধান সমিতি গঠন করেন। ঐ বছরে তারা রাজশাহীর বিভিন্ন
স্থানে অনুসন্ধান চালিয়ে ৩২টি দুষ্প্রাপ্য নিদর্শন সংগ্রহ করেন। এই নিদর্শনগুলো
সংরক্ষণ করার জন্য শরৎ কুমার রায়ের দান করা জমিতে জাদুঘরটির নিজস্ব ভবন নির্মাণের
কাজ শুরু হয়। নির্মাণ শেষ হয় ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে। একই বছরের ১৩ নভেম্বর বাংলার তৎকালীন গভর্নর কারমাইকেল জাদুঘরটি
উদ্বোধন করেন।
১৯১১ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা জাদুঘর অকস্মাৎ এতে
সংরক্ষিত সকল নিদর্শন দাবি করে বসে। তৎকালীন গভর্নর কারমাইকেলের প্রচেষ্টায় ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে ১৪ ফেব্রুয়ারি তারিখে
জারীকৃত একটি সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বরেন্দ্র জাদুঘরকে এর নিদর্শন সংগ্রহ ও
সংরক্ষণের ব্যপারে স্বাধীকার প্রদান করা হয়।
১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে জাদুঘর কর্তৃপক্ষের সাথে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে নওগাঁর পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের খনন কাজ শুরু করে। পরবর্তিতে বরেন্দ্র
অনুসন্ধান সমিতির একক প্রচেষ্টায়পাহাড়পুর থেকে ২৫৬টি নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের পরে জাদুঘরটির অস্তিত্ত্ব
নিয়ে সংকট দেখা দেয়। ১৯৪৯ থেকে ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দ পযর্ন্ত জাদুঘর ভবনটির
অর্ধেকাংশ মেডিকেল স্কুল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে জাদুঘরটি বন্ধ হবার উপক্রম
হলে ঐ বছরের ১০ অক্টোবর তারিখে এর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধিগ্রহণ করে।জাদুঘরটির পরিদর্শকদের মধ্যে রয়েছেনমহাত্মা গান্ধী, নেতাজী
সুভাষচন্দ্র বসু প্রমুখ সহ আনেক বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ।
সংগ্রহ
এই জাদুঘরে ১২ সহস্র গ্রন্থ সমৃদ্ধ একটি
গ্রন্থশালা রয়েছে। জাদুঘরটিকে ৭টি প্রদর্শনকোষ্ঠে ভাগ করা হয়েছে।
·
প্রথম
প্রদর্শনকোষ্ঠে নওগাঁর পাহাড়পুর তেকে উদ্ধারকৃত ২৫৬টি
ঐতিহাসিক সামগ্রী রয়েছে।
·
দ্বিতীয়
প্রদর্শনকোষ্ঠে আছে হিন্দু ও বৌদ্ধদের তৈরী কাঠ ও পাথরের
নানা ভাস্কর।
·
তৃতীয় ও
চতুর্থ প্রদর্শনকোষ্ঠে রয়েছে বিভিন্ন দেব-দেবীর মূর্তি।
·
পঞ্চম
প্রদর্শনকোষ্ঠে আছে বৌদ্ধ মূর্তি।
·
ষষ্ঠ
প্রদর্শনকোষ্ঠে রয়েছে বিভিন্ন ভাষায় লিখিত পাথরের খণ্ড।
·
সপ্তম
প্রদর্শনকোষ্ঠে সংরক্ষিত আছে বিভিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর
নিদর্শনসমূহ।
চিত্রমালা
·
প্রস্তরে খোদাই প্রচীন বাঙ্গালা হরফ
·
প্রস্তরে খোদাই আরবীয় ক্যালিগ্রাফ
·
১৮শ শতাব্দির দুটি মটকা
·
বঙ্গে প্রাচীন প্রাসাদের স্তম্ভ
·
ভৈরবের মাথা
·
কৃষ্ণমূর্তি
·
সূর্য্য, ১১ খ্রিস্টাব্দ, চাপড়া, নওগাঁ।
No comments