Tourist places in Narayanganj - Know about our Bangladesh

Tourist places in Narayanganj

আমাদের তাজমহল




ভারতের আগ্রায় সম্রাট শাহজাহান কর্তৃক নির্মিত তাজমহলের অনুকরণে সোনারগাঁওয়ের পেরাব নামক স্থানে বেসরকারি উদ্যোগে নির্মাণ করা হয়েছে একটি তাজমহল সদৃশ স্থাপনা। এটিকে বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় তাজমহল বলে দাবি করেছেন এর প্রতিষ্ঠাতা। নাম দিয়েছেন বাংলার তাজমহল। ২০০৫ সালে তাজমহল নির্মাণকাজ শুরু হয়। পঞ্চাশ টাকা প্রবেশ ফি বিনিময়ে গত ২০০৮ সালের ঈদুল আজহার দিন থেকে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয় এটি। তারপর থেকে দর্শনার্থীরা হুমড়ি খেয়ে পড়েন এখানে।

ঢাকা থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটারের দূরত্বের বাংলার তাজমহলে ঢাকা-সিলেট অথবা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে খুব সহজেই যাওয়া যায়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে কুমিল¬, দাউদকান্দি অথবা সোনারগাঁওগামী যে কোনও গাড়িতে চড়ে মদনপুর বাসস্ট্যান্ডে নামতে হয়। সেক্ষেত্রে ভাড়া লাগে ১৫ টাকা। সেখান থেকে সিএনজি বা স্কুটারে জনপ্রতি ২৫ টাকা ভাড়ায় সহজেই যাওয়া যায়। 
    
                            ঐতিহ্যের সোনারগাঁয়ে

গ্রামবাংলার প্রকৃত অস্তিত্বের রূপ আজ হারিয়ে যেতে বসেছে আধুনিকতার ছোঁয়ায়। ছায়া ঢাকা, পাখি ডাকা, অপরূপ সৌন্দর্যের সন্ধানে যদি আপনি যেতে চান তো চলে আসতে পারেন প্রাচীন বাংলার রাজধানী সুলতান গিয়াসউদ্দিন আযম শাহের কিংবা ঈশা খাঁর সোনারগাঁয়ে। দেশের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর প্রায় সবাই সোনারগাঁ নামের সঙ্গে পরিচিত। কেবল পরিচিতই নয়, অনেকে এসেছেন, ঘুরেছেন, দেখেছেনও সোনারগাঁকে। তদুপরি বলতে হয় সোনারগাঁয়ে রয়েছে দেখার মতো বিস্তৃত জায়গা। যেমন ধরুন সুলতান গিয়াসউদ্দিন আযম শাহের মাজার কিংবা পাঁচ পীরের দরগা কথাই। ঢাকা থেকে কিংবা দেশের যে কোনও প্রান্ত থেকেই বাসে মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা নেমে রিকশা নিয়ে বেরিয়ে পড় দেখতে সোনারগাঁকে। চৌরাস্তা থেকে পশ্চিম দিকে যে রাস্তাটি গিয়েছে রিকশা নিয়ে আগাতে থাকুন। ঐতিহ্যবাহী মোগড়াপাড়া হাইস্কুল পার হয়ে সোনারগাঁ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের পাশ দিয়ে গাছপালা ঢাকা সরু পিচের আঁকাবাঁকা পথ দিয়ে সামনে এগুলেই সুলতান গিয়াসউদ্দিন আযম শাহের মাজার। গিয়াসউদ্দিন আযম শাহের আমলের সোনারগাঁয়ের ইতিহাস ছিল অনেক সমৃদ্ধ। ওই রাস্তা ধরেই সামনে এগিয়ে গেলে বিখ্যাত পাঁচ পীরের মাজার। যাদের এলাকাবাসী অত্যন্ত শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে।
সোনারগাঁ লোক কারুশিল্পের জাদুঘরের কথা তো সর্বজনবিদিত। জাদুঘরের বর্ণনা করে কারও সময় নষ্ট না- বা করলাম। জাদুঘর পেরিয়ে যেতে পারেন পানাম নগরীতে। দুপাশে সারি সারি পুরনো ভবন। নিশ্চুপ, নিরেট শান্ত পরিবেশ। ভবনগুলোকে দেখলেই বুঝা যায় সোনারগাঁয়ের ইতিহাস কত শান-শওকতে পরিপূর্ণ ছিল। সোনারগাঁয়ের গোয়ালদী গ্রামে রয়েছে বাংলার ইতিহাসের প্রাচীনতম মসজিদগুলোর অন্যতম একটি মসজিদ। যেতে পারেন বারদীতেও। মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা থেকে স্কুটার কিংবা রিকশায়। বারদীতে রয়েছে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আশ্রম। হিন্দু নাগ জামিদারদের প্রাচীন ভবনগুলোও দর্শনীয়। রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত জ্যোতিবসুর পৈতৃক বাড়ি। শান বাঁধানো পুকুরঘাট, গাছপালা ঘেরা নৈসর্গিক দৃশ্য সম্পন্ন গ্রামবাংলার প্রকৃত রূপ।
যদি আপনি বাংলার তাজমহলকে দেখতে চান তবুও আপনাকে আসতে হবে সোনারগাঁয়েই। সোনারগাঁয়ের পেরাব গ্রামে আগ্রার তাজমহলের আদলে নবনির্মিত বাংলার তাজমহলটি অবশ্যই   দেখার মতো।
সোনারগাঁয়ে দেখার মতো রয়েছে এমন অসংখ্য স্থান যেগুলোর সব বর্ণনা হয়তো করা গেল না কিন্তু ছুটির কোনও একদিনে ঘুরে বেড়ালেও সোনারগাঁকে দেখে শেষ করা যাবে না। ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সংমিশ্রণে আমরা আধুনিক সোনারগাঁকে দেখব দুচোখ ভরে।









No comments

Theme images by TommyIX. Powered by Blogger.