FIFA World Cup - Know about our Bangladesh

FIFA World Cup

                      ফিফা বিশ্বকাপ

ফিফা বিশ্বকাপ (ইংরেজি: FIFA World Cup) (ফুটবল বিশ্বকাপ, সকার বিশ্বকাপ, অথবা শুধু বিশ্বকাপ নামেও পরিচিত) একটি আন্তর্জাতিক ফুটবল প্রতিযোগিতা যেখানে ফিফা (ফরাসি: FIFA বা Fédération Internationale de Football Association উচ্চারণ: ফেদেরাসিওঁ অ্যাঁতের্নাসিওনাল্‌ দ্য ফুৎবল্‌ আসোসিয়াসিওঁ‌, অর্থাৎ "আন্তর্জাতিক ফুটবল সংস্থা") সহযোগী দেশগুলোর পুরুষ জাতীয় ফুটবল দল অংশ নেয়। ফিফা বিশ্ব ফুটবল নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা। ১৯৩০ সালে এই প্রতিযোগিতা শুরু হয় এবং এখন পর্যন্ত চার বছর পর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মাঝে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে ১৯৪২  ১৯৪৬ সালে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়নি।
প্রতিযোগিতাটি দুটি ভাগে বিভক্ত, বাছাইপর্ব ও চূড়ান্ত পর্ব (মূল বিশ্বকাপ)চুড়ান্ত পর্যায়ে কোন দল খেলবে তা নির্বাচনের জন্য অংশগ্রহণকারী দলগুলোকে বাছাইপর্বে অংশ নিতে হয়। বর্তমানে মূল বিশ্বকাপের আগের তিন বছর ধরে প্রতিযোগিতার বাছাইপর্ব অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতার বর্তমান ধরন অনুযায়ী ৩২টি জাতীয় দল চূড়ান্ত পর্বে অংশ নেয়। আয়োজক দেশে প্রায় একমাস ধরে এই চূড়ান্ত পর্বের প্রতিযোগিতা চলে। দর্শক সংখ্যার দিক দিয়ে বিশ্বকাপ মূল পর্ব বিশ্বের বৃহত্তম অনুষ্ঠান। ফিফার হিসেব অনুযায়ী ২০০৬ সালের বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা দেখেছেন প্রায় ৭১৫.১ মিলিয়ন দর্শক।
এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ২০টি আসরে কেবল ৮টি জাতীয় দল বিশ্বকাপ শিরোপা জিতেছে। ৫বার বিশ্বকাপ জিতে ব্রাজিল হচ্ছে বিশ্বকাপের সফলতম দল। বর্তমান শিরোপাধারী জার্মানি  ইতালি ৪টি শিরোপা নিয়ে যৌথভাবে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। অন্যান্যদের মধ্যে উরুগুয়ে (প্রথম বিশ্বকাপ জয়ী) ও আর্জেন্টিনা দুবার করে এবং ইংল্যান্ড, ফ্রান্স এবং স্পেন একবার করে শিরোপা জিতেছে।
সর্বশেষ বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে ব্রাজিলে, ২০১৪ সালের ১২ জুন থেকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত। এই বিশ্বকাপে জার্মানি আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে পরাজিত করে শিরোপা জিতে নিয়েছে।
১৯৯১ সাল থেকে ফিফা ফিফা মহিলা বিশ্বকাপ আয়োজন শুরু করেছে। এটিও সাধারণ বিশ্বকাপের ন্যায় চার বছর পর পর অনুষ্ঠিত হয়।
ইতিহাস
পূর্ববর্তী আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা
বিশ্বের প্রথম আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলা হয়েছিল ১৮৭২ সালে স্কটল্যান্ড  ইংল্যান্ডের মধ্যে। প্রথম আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা ছিল ১৮৮৪ সালে শুরু হওয়া ব্রিটিশ হোম চ্যাম্পিয়নশিপএ সময়ে গ্রেট ব্রিটেন  আয়ারল্যান্ডের বাইরে ফুটবল খেলা বলতে গেলে অনুষ্ঠিতই হত না। সেই শতাব্দীর শেষের দিকে বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তে ফুটবলের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং এটিকে ১৯০০, ১৯০৪ ও ১৯০৬ সালের অলিম্পিকে প্রদর্শনী খেলা হিসেবে রাখা হয় তবে এর জন্য কোন পুরস্কার বরাদ্দ ছিল না। ১৯০৮ সালের অলিম্পিকে ফুটবল প্রথম আনুষ্ঠানিক খেলার মর্যাদা পায়। এফএ পরিকল্পনা অনুযায়ী এই প্রতিযোগিতা ছিল অপেশাদার খেলোয়াড়দের জন্য এবং এটিকে প্রতিযোগিতার চেয়ে প্রদর্শনী হিসেবেই সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখা হত। ১৯০৮ ও ১৯১২ দুটি অলিম্পিকেই গ্রেট ব্রিটেন (যাদের প্রতিনিধিত্ব করেছিল ইংল্যান্ড জাতীয় অপেশাদার ফুটবল দল) জয়লাভ করে।
১৯০৪ সালে ফিফা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ঠিক পরেই, ১৯০৬ সালে ফিফা সুইজারল্যান্ডে অলিম্পিকের আদল থেকে ভিন্ন একটি আন্তর্জাতিক ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। আন্তর্জাতিক ফুটবলের বয়স তখনো অনেক কম এবং হয়ত একারণেই ফিফার ইতিহাসে এই প্রতিযোগিতাকে ব্যর্থ আখ্যা দেয়া হয়েছে।
অলিম্পিকে অপেশাদার দলের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলার পাশাপাশি স্যার থমাস লিপটন ১৯০৯ সালে তুরিনে স্যার থমাস লিপটন ট্রফি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। এটি ছিল বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ক্লাবের (জাতীয় দল নয়) মধ্যে একটি চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতা। এসব দলের প্রত্যেকে আলাদা আলাদা দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছিল, এজন্য এই প্রতিযোগিতাকে অনেকে প্রথম বিশ্বকাপ বলেন। এতে ইতালি, জার্মানি এবং সুইজারল্যান্ড-সহ বিভিন্ন দেশের খ্যাতনামা পেশাদার দল অংশ নেয়। কিন্তু ইংল্যান্ডের দ্য ফুটবল এসোসিয়েশন এই প্রতিযোগিতার সাথে জড়িত থাকতে ও পেশাদার দল পাঠাতে অস্বীকৃতি জানায়। ইংল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য লিপটন পশ্চিম অকল্যান্ডকে আমন্ত্রণ জানান যা ছিল ডারহাম কাউন্টির একটি অপেশাদার দল। পশ্চিম অকল্যান্ড এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয় এবং পরবর্তীতে ১৯১১ সালের প্রতিযোগিতায় শিরোপা ধরে রাখতে সমর্থ হয়। প্রতিযোগিতার নিয়ম অনুসারে তাদেরকে চিরতরে ট্রফিটি দিয়ে দেয়া হয়।
১৯১৪ সালে, ফিফা অলিম্পিক প্রতিযোগিতায় অনুষ্ঠিত ফুটবল প্রতিযোগিতাকে "অপেশাদার বিশ্ব ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ" হিসেবে স্বীকৃতি দিতে রাজি হয় এবং এই প্রতিযোগিতা পরিচালনার দায়িত্ব নেয়।এর ফলে ১৯২০ সালের গ্রীষ্ম অলিম্পিকে বিশ্বের প্রথম আন্তমহাদেশীয় ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেয় মিশর (প্রথম খেলায় নকড আউট হয়) ও তেরটি ইউরোপীয়ান দল। এতে বেলজিয়াম স্বর্ণপদক জিতে নেয়।উরুগুয়ে ১৯২৪ ও ১৯২৮ সালের অলিম্পিক ফুটবল প্রতিযোগিতায় স্বর্ণ লাভ করে। ১৯২৮ সালে ফিফা অলিম্পিকের বাইরে আলাদাভাবে নিজস্ব আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৩০ সালে স্বাধীনতার শতবর্ষ পা দেয়া দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়েকে (১৯২৪ সাল থেকে ফিফার পেশাদার যুগ শুরু করে) ফিফা তাদের ১৯৩০ সালের প্রথম বিশ্বকাপের স্বাগতিক দেশ হিসেবে নির্বাচন করে।
প্রথম বিশ্বকাপ
স্টাডিও সেন্টেনারিও, মোন্তেবিদেও, উরুগুয়ের যে স্টেডিয়ামে ১৯৩০ সালের প্রথম বিশ্বকাপ ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়
১৯৩২ সালের লস এঞ্জেলসে অনুষ্ঠিত গ্রীষ্ম অলিম্পিকে ফুটবলকে না রাখার পরিকল্পনা করা হয় কারণ যুক্তরাষ্ট্রে তখন ফুটবল (সকার) জনপ্রিয় ছিল না। ফুটবলের পরিবর্তে ওখানে আমেরিকান ফুটবল (রাগবি ফুটবল) জনপ্রিয় ছিল। ফিফা এবং আইওসি মাঝে অপেশাদার খেলার মর্যাদা নিয়ে মতবিরোধও দেখা দেয়। ফলে ফুটবল অলিম্পিক থেকে বাদ পড়ে যায়।একারনে ফিফা প্রেসিডেন্ট জুলে রিমে ১৯৩০ সালে উরুগুয়েতে প্রথম বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। নির্বাচিত বিভিন্ন দেশের জাতীয় ফুটবল সংস্থাকে এতে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রন জানানো হয়। কিন্তু উরুগুয়েতে বিশ্বকাপ আয়োজনের অর্থ ছিল ইউরোপের বিভিন্ন দেশগুলোকে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল সফরে আসতে হবে। এজন্য কোন ইউরোপীয় দেশ প্রতিযোগিতা শুরুর দুইমাস আগেও দল পাঠাতে সম্মত হয়নি।  রিমে শেষ পর্যন্ত বেলজিয়াম, ফ্রান্স, রোমানিয়া, ও যুগোস্লাভিয়া থেকে দল আনাতে সক্ষম হন। মোট ১৩টি দেশ এতে অংশ নেয়। দক্ষিণ আমেরিকা থেকে সাতটি, ইউরোপ থেকে দুটি ও উত্তর আমেরিকা থেকে দুটি।
প্রথম বিশ্বকাপের প্রথম দুটি ম্যাচ একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হয় যাতে অংশ নেয় ফ্রান্স  মেক্সিকো এবং যুক্তরাষ্ট্র  বেলজিয়ামফ্রান্স ৪-১ এবং যুক্তরাষ্ট্র ৩-০ ব্যবধানে এতে জয়ী হয়। বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম গোল করেন ফ্রান্সের লুসিয়েন লরেন্ত ফাইনালে ৯৩,০০০ দর্শকের সামনে উরুগুয়ে আর্জেন্টিনাকে ৪-২ ব্যবধানে হারিয়ে প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের গৌরব লাভ করে।
বিশ্বকাপের বিস্তৃতি
প্রথম দিকের বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতা আয়োজনের মূল সমস্যা ছিল আন্তমহাদেশীয় যাতায়াত ও যুদ্ধঘটিত সমস্যা। কয়েকটি দক্ষিণ আমেরিকান দল ১৯৩৪  ১৯৩৮ সালের বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতার জন্য ইউরোপে যেতে আগ্রহী থাকলেও কেবল ব্রাজিলই এই দুটি প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পেরেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারনে ১৯৪২ ও ১৯৪৬ সালে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিতই হয়নি।
১৯৫০ সালের বিশ্বকাপে প্রথম কোন ব্রিটিশ দল অংশ নেয়। এই ব্রিটিশ দলগুলো ১৯২০ সাল থেকে ফিফাকে বয়কট করে আসছিল। এর একটি কারণ ছিল তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের সাথে যেসব দেশের যুদ্ধ হয়েছিল তাদের সাথে না খেলার মানসিকতা এবং অন্য কারনটি ছিল ফুটবলে বিদেশী কর্তৃত্বের বিপক্ষে প্রতিবাদ। তবে তারা ১৯৪৬ সালে ফিফার আমন্ত্রণে সাড়া দেয়। এই বিশ্বকাপে ১৯৩০ সালের বিশ্বকাপজয়ী উরুগুয়েকে আবার প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে দেখা যায়, যারা পূর্ববর্তী দুটি বিশ্বকাপ বয়কট করেছিল। ১৯৫০ সালে উরুগুয়ে আবার বিশ্বকাপ জিতে নেয়।
১৯৩৪ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত ১৬টি দল মূল পর্বে অংশ নিত। তবে ১৯৩৮ সালে জার্মানি অস্ট্রিয়াকে দখল করায় প্রতিযোগিতায় ১৫টি দল অংশ নেয়। ১৯৫০ সালে ভারত, স্কটল্যান্ড  তুরস্ক নাম প্রত্যাহার করায় এই বিশ্বকাপে ১৩টি দল অংশগ্রহণ করে।অধিকাংশ দলই ছিল ইউরোপ  দক্ষিণ আমেরিকা থেকে আগত, অল্প কিছু দল খেলেছে উত্তর আমেরিকা, আফ্রিকা, এশিয়া  ওশেনিয়া থেকে। এসব দল খুব সজেই ইউরোপীয় ও দক্ষিণ আমেরিকান দলগুলোর কাছে হেরে যেত। ১৯৮২ সাল পর্যন্ত ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকা বাদে কেবল যে দলটি প্রথম পর্বের বাধা অতিক্রম করতে পেরেছে তারা হচ্ছে: যুক্তরাষ্ট্র, ১৯৩০ বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনাল; কিউবা, ১৯৩৮ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনাল; উত্তর কোরিয়া, ১৯৬৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনাল; এবং মেক্সিকো, ১৯৭০ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনাল।
১৯৮২ বিশ্বকাপে দলের সংখ্যা বৃদ্ধি করে ২৪ করা হয়। এরপর ১৯৯৮ সাল থেকে দলের সংখ্যা ৩২-এ উন্নীত করা হয়।এতে করে আফ্রিকা, এশিয়া ও উত্তর আমেরিকা থেকে আরো বেশি দল অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। এক্ষেত্রে ওশেনিয়া মহাদেশ ব্যতিক্রম কেননা এখান থেকে কোন দল বিশ্বকাপে সুযোগ পায়নি। সাম্পতিক বছরগুলোতে এসব এলাকার দলগুলো তুলনামূলকভাবে বেশি সফলতা পেয়েছে। এসব এলাকার বিশ্বকাপের নক-আউট পর্যায়ে উত্তীর্ণ দলগুলো হলঃ মেক্সিকো, ১৯৮৬ সালে কোয়ার্টার ফাইনাল এবং ১৯৯৪, ১৯৯৮, ২০০২  ২০০৬ সালে নকআউট পর্যায়; মরক্কো, ১৯৮৬ সালে নকআউট পর্যায়; ক্যামেরুন, ১৯৯০ সালের কোয়ার্টার-ফাইনালিস্ট; কোস্টারিকা, ১৯৯০ সালে নকআউট পর্যায়; নাইজেরিয়া, ১৯৯৪ ও ১৯৯৮ সালে নকআউট পর্যায়; সৌদি আরব, ১৯৯৪ সালে নকআউট পর্যায়; যুক্তরাষ্ট্র, ১৯৯৪ সালে নকআউট ও ২০০২ সালে কোয়ার্টার-ফাইনাল; দক্ষিণ কোরিয়া, ২০০২ সালে চতুর্থ স্থান; সেনেগাল, ২০০২ সালে কোয়ার্টার-ফাইনাল; জাপান, ২০০২ সালে নকআউট পর্যায়; এবং অস্ট্রেলিয়া  ঘানা, উভয়ে ২০০৬ সালে নকআউট পর্যায়। তবে, ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার দলগুলো এখনও অন্যান্য দলের ধরাছোয়ার বাইরে রয়েছে। এর জ্বলন্ত উদাহরন হচ্ছে ২০০৬ সালের বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালের আটটি দলই ছিল ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার।
২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার জন্য ১৯৮টি দল প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছে এবং ২০১০ ফিফা বিশ্বকাপের জন্য রেকর্ড ২০৪টি দল প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছে।
অন্যান্য ফিফা প্রতিযোগিতা
নারীদের জন্য সমমানের ফিফা মহিলা বিশ্বকাপ, প্রথম অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯১ সালে চীনেমহিলা বিশ্বকাপের পরিধি ছোট এবং পুরুষদের প্রতিযোগিতার চেয়ে অনেক কম গুরুত্ব পায়। তবে অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা বাড়ছে। ২০০৭ সালের প্রতিযোগিতায় ১২০ টি দল অংশ নিয়েছিল যা ১৯৯১ সালের দ্বিগুন।
অন্যান্য অনেক ক্রীড়ার (এমনকি মহিলা ফুটবল) মত অলিম্পিকে তেমন উঁচু মানের ফুটবল প্রতিযোগিতা হয় না। ১৯৯২ সাল থেকে অলিম্পিকে অনুর্ধ-২৩ দলের যেকোন খেলোয়াড় এবং সর্বোচ্চ তিনজন পূর্ণবয়স্ক খেলোয়াড় অংশ নিতে পারেন।
ফিফা কনফেডারেশন্স কাপ হচ্ছে মূল বিশ্বকাপের আগে একটি প্রতীকি প্রতিযোগিতা যেটি একবছর আগেই আয়োজক দেশে অনুষ্ঠিত হয়। ছয়টি কনফেডারেশনের চ্যাম্পিয়ন, আয়োজক দেশ ও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দল এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।
ফিফা অন্যান্য যুব প্রতিযোগিতারও আয়োজন করে থাকে। যেমন ফিফা অনুর্ধ-২০ বিশ্বকাপ, ফিফা অনুর্ধ-১৭ বিশ্বকাপ, ফিফা অনুর্ধ-২০ প্রমীলা বিশ্বকাপ, ফিফা অনুর্ধ-১৭ প্রমিলা বিশ্বকাপ, ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ, এবং ফুটবলের অন্যান্য ধারা যেমন: ফিফা ফুটসল বিশ্বকাপ ও ফিফা বিচ সকার বিশ্বকাপ।
ট্রফি

১৯৩০ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত বিজয়ী দলকে জুলে রিমে ট্রফি প্রদান করা হত। জনসাধারণের কাছে এটি শুধু বিশ্বকাপ বা Coupe du Monde নামেই বেশি পরিচিত ছিল, তবে ১৯৪৬ সালে প্রথম বিশ্বকাপ আয়োজনকারী ফিফা প্রেসিডেন্ট জুলে রিমের নামে এটির নামকরণ করা হয়। ১৯৭০ সালে ব্রাজিল তৃতীয় বারের মত বিশ্বকাপ জিতলে তাদেরকে স্থায়ীভাবে ট্রফিটি দেয়া হয়। ১৯৮৩ সালে ট্রফিটি চুরি হয়ে যায় এবং পরে আর উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। প্রায় নিশ্চিতভাবেই বলা যায় চোর ট্রফিটিকে গলিয়ে ফেলেছে।
১৯৭০ সালের পর আরেকটি নতুন ট্রফির যা ফিফা বিশ্বকাপ ট্রফি নামে পরিচিত, নকশা প্রণয়ন করা হয়। সাতটি মহাদেশ থেকে আগত বিশেষজ্ঞগণ ফিফাকে ৫৩টি মডেল প্রদর্শন করেন। শেষপর্যন্ত ইতালিয় নকশাকার সিলভিও গাজ্জানিগার তৈরীকৃত নমুনা বিশ্বকাপ ট্রফি হিসেবে গৃহীত হয়। এ নতুন ট্রফিটির উচ্চতা ৩৬ সেন্টিমিটার, ১৮-ক্যারট সোনা দিয়ে তৈরি ও ওজন ৬,১৭৫ গ্রাম। এর ভিত্তি দুস্তরের মূল্যবান ম্যালাকাইট দিয়ে তৈরী। ভিত্তির নিচের দিকে ১৯৭৪ থেকে আজ পর্যন্ত সকল বিশ্বকাপজয়ীর নাম গ্রথিত করা আছে। গাজ্জানিগা এ ট্রফির বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছেন: "The lines spring out from the base, rising in spirals, stretching out to receive the world. From the remarkable dynamic tensions of the compact body of the sculpture rise the figures of two athletes at the stirring moment of victory."
এই নতুন ট্রফি বিজয়ী দেশকে স্থায়ীভাবে আর দেয়া হয় না, তা তারা যতবারই জিতুক না কেন। বিশ্বকাপ জয়ী দল পরবর্তী বিশকাপ পর্যন্ত ট্রফিটি তাদের কাছে রাখতে পারে। এরপর তাদেরকে সোনার প্রলেপ দেয়া নকল বিশ্বকাপ দেয়া হয়। আর্জেন্টিনা, জার্মানি (পশ্চিম জার্মানি হিসেবে), ইতালি ও ব্রাজিল প্রত্যেকে দ্বিতীয় ট্রফিটি দুবার করে জিতেছে, ফ্রান্স কেবল একবার এটি জিতেছে। ২০৩৮ সালে এটির ভিত্তিতে নতুন বিজয়ী দলের নাম লেখার মত আর জায়গা থাকবে না। তখন এ ট্রফিটি হয়তো বাদ দেয়া হবে।
খেলার ধরন
যোগ্যতা
১৯৩৪ সালের দ্বিতীয় বিশ্বকাপে থেকে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা সীমিত রাখতে যোগ্যতা নিরূপণী প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ছয়টি মহাদেশীয় এলাকার (আফ্রিকা, এশিয়া, উত্তর ও মধ্য আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান, দক্ষিণ আমেরিকা, ওশেনিয়া, ইউরোপ) কনফেডারেশন এটির ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত। প্রতিটি বিশ্বকাপে ফিফা ঠিক করে কোন মহাদেশ থেকে কতটি দল অংশ নেবে। সাধারণত কনফেডারেশনভুক্ত দলের শক্তি ও দক্ষতার উপর নির্ভর করেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে এখানে কনফেডারেশন সমূহের লবিং ও কাজ করে।
সাধারণত চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার তিন বছর আগেই যোগ্যতা নিরূপনী প্রতিযোগিতা শুরু হতে পারে। এটি প্রায় দুবছর ধরে চলে। বিভিন্ন কনফেডারেশনভেদে প্রতিযোগিতার রকম বিভিন্ন হতে পারে। সাধারণত একটি বা দুটি স্থান আন্তমহাদেশীয় দলের মধ্যে প্লে অফের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। উদাহরণস্বরুপ: ২০০৬ সালের বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে ওশেনিয়া অঞ্চলের বিজয়ী ও দক্ষিণ আমেরিকার পঞ্চম স্থানের দল দুটি বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়ার জন্য প্লে অফ খেলেছিল। ১৯৩৮ বিশ্বকাপ থেকে স্বাগতিকরা চূড়ান্ত পর্বে সরাসরি অংশ নিচ্ছে। আগে বিগত বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন দলটির পরবর্তী বিশ্বকাপে অংশ নিতে বাছাই পর্ব খেলতে হত না। কিন্তু ২০০৬ সাল থেকে বিগত চ্যাম্পিয়ন দলটিকেও বাছাই পর্ব টপকে চূড়ান্ত পর্বে খেলতে হচ্ছে।
মূল আসর
বর্তমানে ৩২টি জাতীয় দল একমাসব্যাপী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। এই প্রতিযোগিতা দু'ধাপে বিভক্ত -
·         গ্রুপ পর্যায় এবং
·         নক-আউট পর্যায়।
গ্রুপ পর্যায়ে দলগুলোকে প্রতি দলে চারটি করে আটটি গ্রুপে ভাগ করা হয়। বিশ্বকাপের মূলপর্বের ছয়মাস আগে কোন গ্রুপে কে থাকবে তা নির্ধারন করা হয়। ফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিং অনুযায়ী শীর্ষ আটটি দলকে (স্বাগতিক দল-সহ) আটটি ভিন্ন গ্রুপে রাখা হয়। প্রতি গ্রুপের বাকি তিনটি দলের স্থান বিভিন্ন এলাকার ভিত্তিতে নির্দিষ্ট করা হয়। পরে ঐ এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন দলের মধ্যে লটারি করে চূড়ান্ত গ্রুপ নির্ধারণ করা হয়। ১৯৯৮ থেকে একই গ্রুপে যেন দুটির বেশি ইউরোপীয় দল বা অন্য কনফেডারেশনের একটির বেশি দল না থাকে সে জন্য নিয়ম বেঁধে দেয়া হয়েছে।
প্রতি গ্রুপে রাউন্ড-রবিন পদ্ধতিতে একটি দল বাকী তিনটি দলের সাথে তিনটি খেলা খেলে। গ্রুপের তিনটি খেলার পর শীর্ষ দুটি দল পরের ধাপে উত্তীর্ণ হয়। গ্রুপের মধ্যে দলের অবস্থান নির্ণয়ের জন্য পয়েন্ট ব্যবস্থা গৃহীত হয়। ১৯৯৪ সাল থেকে একটি দলের জয়ের জন্য তিন পয়েন্ট ও ড্রয়ের জন্য এক পয়েন্ট দেয়া হচ্ছে। এর আগে প্রতি খেলায় জয়ে জন্য দুই পয়েন্ট ছিল। যদি দুটি দলের পয়েন্ট সমান হয়ে যায় তাহলে প্রথমে গোল ব্যবধান, এরপর গোল সংখ্যা, এরপর দু'টি দলের খেলার ফলাফলের উপর নির্ভর করে অবস্থান নির্ণয় করা হয়। এতেও যদি অবস্থান না নির্ণয় করা যায় তাহলে লটারির মাধ্যমে অবস্থান নির্ণয় করা হয়।
নক আউট পর্যায়ে কেউ হারলেই প্রতিযোগিতা থেকে বাদ হয়ে যায়। এতে দু'টি দল এক-লেগের খেলা খেলে। নির্ধারিত নব্বুই মিনিটে খেলা না শেষ হলে ‘’’অতিরিক্ত সময়’’’ ‘’’পেনল্টি শুটআউট’’’ এর মাধ্যমে খেলার জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়। এই নিয়ম গ্রুপ পর্যায়ের পর দ্বিতীয় পর্যায় থেকেই চালু হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে এক গ্রুপের বিজয়ী অন্য গ্রুপের রানার্স-আপের সাথে খেলে থাকে। এরপর কোয়ার্টার-ফাইনাল, সেমি-ফাইনাল, তৃতীয় স্থান নির্ধারনী ও ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
বিভিন্ন বিশ্বকাপে প্রতিযোগিতার যে ধরন ব্যবহৃত হয়েছে তার একটি তালিকা নিচে দেয়া হয়েছে:
·         ১৯৩০: গ্রুপ পর্যায়, এরপর পর্যায় যাতে ৪টি দল অংশ নেয় (গ্রুপ বিজয়ী; কোন তৃতীয় স্থান নির্ধারণী খেলা অনুষ্ঠিত হয়নি)
·         ১৯৩৪১৯৩৮: নকআউট প্রতিযোগিতা; কেবল এই বিশ্বকাপেই গ্রুপ পর্যায় ছিল না
·         ১৯৫০: প্রথম গ্রুপ পর্যায়, এরপর আরেকটি গ্রুপ পর্যায় যাতে ৪টি দল অংশ নেয়। (গ্রুপ বিজয়ী); কেবল এই বিশ্বকাপেই কোন অফিসিয়াল ফাইনাল খেলা ছিল না
·         ১৯৫৪১৯৭০: গ্রুপ পর্যায়, এরপর নকআউট পর্যায় যাতে ৮টি দল অংশ নেয়। (গ্রুপ বিজয়ী ও রানার্স-আপ)
·         ১৯৭৪১৯৭৮: প্রথম গ্রুপ পর্যায়, এরপর আরেকটি গ্রুপ পর্যায় যাতে দুটি গ্রুপে ৮টি দল অংশ নেয়। (প্রথম গ্রুপের বিজয়ী ও রানার্স-আপ), এরপর ফাইনাল (দ্বিতীয় গ্রুপ পর্যায়ের বিজয়ী ফাইনালে খেলে; দ্বিতীয় গ্রুপ পর্যায়ে রানার্স-আপ দল দু'টি তৃতীয় স্থান নির্ধারণী খেলা খেলে)
·         ১৯৮২: প্রথম গ্রুপ পর্যায়, এরপর দ্বিতীয় গ্রুপ পর্যায় যাতে ১২টি দল অংশ নেয় (প্রথম পর্যায়ের বিজয়ী ও রানার্স-আপ), এরপর নকআউট পর্যায় যাতে ৪টি দল অংশ নেয় (দ্বিতীয় পর্যায়ের বিজয়ী)
·         ১৯৮৬১৯৯৪: গ্রুপ পর্যায়, এরপর নকআউট পর্যায় যাতে ১৬টি দল অংশ নেয় (গ্রুপ বিজয়ী, রানার্স-আপ ও চারটি শ্রেষ্ঠ তৃতীয়-স্থানের দল)
·         ১৯৯৮বর্তমান: গ্রুপ পর্যায়, এরপর নকআউট পর্যায় যাতে ১৬টি দল অংশ নেয় (গ্রুপ বিজয়ী ও রানার্স-আপ)
আয়োজক নির্বাচন
প্রথমদিকের বিশ্বকাপের আয়োজক ফিফা কংগ্রেসের সভাতে নির্ধারণ করা হত। এসব নির্বাচন ছিল চরম বিতর্কিত, কারণ ফুটবলের দুই পরাশক্তি দক্ষিণ আমেরিকা  ইউরোপের মধ্যে জাহাজযোগে যাতায়াতে প্রায় তিন-সপ্তাহ লাগত। একারনে উরুগুয়েতে অনুষ্ঠিত প্রথম বিশ্বকাপে মাত্র চারটি ইউরোপীয় দেশ অংশ নেয়। পরের দুটি বিশ্বকাপ ইউরোপে অনুষ্ঠিত হয়। এ দুটি বিশ্বকাপের দ্বিতীয়টি অর্থাৎ ১৯৩৮ ফিফা বিশ্বকাপ ফ্রান্সে অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্তটি বিতর্কিত হয়েছিল। অন্যান্য আমেরিকান দেশগুলো মনে করেছিল বিশ্বকাপ একবার ইউরোপ ও একবার আমেরিকা এভাবে দুটি মহাদেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। একারণে আর্জেন্টিনা  উরুগুয়ে উভয়েই ১৯৩৮ সালের বিশ্বকাপ বর্জন করে। 
১৯৫৮ ফিফা বিশ্বকাপের পর থেকে আর কোন সম্ভাব্য বিতর্ক এড়াতে ফিফা ইউরোপ ও আমেরিকার মধ্যে পালাক্রমে বিশ্বকাপ আয়োজনের একটি নকশা প্রণয়ন করে, যেটি ১৯৯৮ ফিফা বিশ্বকাপ পর্যন্ত চলেছে। ২০০২ ফিফা বিশ্বকাপ যৌথ ভাবে আয়োজন করে জাপান  দক্ষিণ কোরিয়া, যা ছিল এশিয়া মহাদেশে অনুষ্ঠিত প্রথম বিশ্বকাপ (এই প্রতিযোগিতাই প্রথম ও এখন পর্যন্ত একমাত্র প্রতিযোগিতা যা একাধিক দেশ মিলে আয়োজন করেছে)। ২০১০ সালের বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে দক্ষিণ আফ্রিকায় যা হবে আফ্রিকা মহাদেশে অনুষ্ঠিত প্রথম বিশ্বকাপ।
বর্তমানে আয়োজক দেশ ফিফার নির্বাহী কমিটির ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন করা হয়। যে দেশ বিশ্বকাপ আয়োজন করতে ইচ্ছুক তাদের জাতীয় ফুটবল এসোসিয়েশন ফিফার কাছ থেকে "আয়োজনের নীতিমালা" সংগ্রহ করে। এই নীতিমালায় বিশ্বকাপ আয়োজনে করনীয় সকল ধাপ ও চাহিদার বিস্তারিত বিবরন আছে। এগুলো পূরনে সক্ষম হলে সেই দেশ ফিফার কাছ থেকে আয়োজক নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতার কাগজপত্র সংগ্রহ করে জমা দেয়। ফিফার একটি প্রতিনিধিদল ঐ দেশ ভ্রমণ করে ফিফার চাহিদা কতটুকু পূরন হয়েছে তা পর্যবেক্ষণ করে একটি রিপোর্ট তৈরি করে। বর্তমানে আয়োজক নির্বাচন বিশ্বকাপের ছয় বছর পূর্বে হয়ে থাকে। ২০১০ ও ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ দুটি ভিন্ন মহাদেশে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে এবং কেবল ঐ মহাদেশের কিছু নির্বাচিত দেশ আয়োজক নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পাবে।
২০১৪ বিশ্বকাপের আয়োজক নির্বাচন
২০১০ ফিফা বিশ্বকাপ আফ্রিকা মহাদেশে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর ২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপ দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ২০০৩ সালে, যা ১৯৭৮ সালের পর দক্ষিণ আমেরিকায় অনুষ্ঠিতব্য প্রথম বিশ্বকাপে। ব্রাজিল  কলম্বিয়া প্রাথমিকভাবে বিশ্বকাপ আয়োজনের আগ্রহ প্রকাশ করেছে,কিন্তু কলম্বিয়া আগ্রহ প্রত্যাহার করায় এখন পর্যন্ত ব্রাজিল একমাত্র প্রার্থী হিসেবে টিকে আছে।  অবশ্য দক্ষিণ আমেরিকার কোন দেশ যদি ফিফার বেধে দেয়া মান অর্জনে সক্ষম না হয় তাহলে বিশ্বকাপ অন্য মহাদেশে স্থানান্তর করা হতে পারে। সাম্প্রতিককালে, ফিফা প্রেসিডেন্ট সেপ ব্ল্যাটার উল্লেখ করেছেন "Brazil is likely to be the host", but also said that "I can't guarantee that Brazil will be the host, but the ball is on Brazil's court now." (ব্রাজিলের বিশ্বকাপ আয়োজনের সম্ভাবনা বেশি। তবে আমি নিশ্চিত করে বলতে পারিনা ব্রাজিলই আয়োজক হবে, তবে বল এখন ব্রাজিলের কোর্টে।) চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা রয়েছে ২০০৭ সালের নভেম্বর মাস নাগাদ।
২০১৮ বিশ্বকাপের আয়োজক নির্বাচন
২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপ কোন মহাদেশে বরাদ্দ দেয়া হয়নি; প্রকৃতপক্ষে পালাক্রমে বিভিন্ন মহাদেশে বিশ্বকাপ আয়োজনের নীতি ২০১৪ সালের পর আর নাও থাকতে পারে। যে সব দেশ ২০১৮ বিশ্বকাপ আয়োজনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে তাদের মধ্যে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, রাশিয়া, মেক্সিকো, স্পেন, পর্তুগাল  যুক্তরাষ্ট্র, আবার বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ড ২০০০ উয়েফা ইউরোপীয়ান ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ সফলভাবে যৌথ-আয়োজন করার পর বেনেলাক্স দেশ (বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড  লুক্সেমবার্গ) যুগ্মভাবে বিশ্বকাপ আয়োজনের পরিকল্পনা করছে।ফিফা প্রেসিডেন্ট সেপ ব্ল্যাটার ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০০৭ তারিখে বিশ্বকাপ বলেছেন যে ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ উত্তম আমেরিকায় হওয়া উচিত এবং তিনটি দেশ আছে যারা স্বাগতিক হতে পারে: যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডা। অবশ্য এ সিদ্ধান্ত নির্ভর করে ফিফার বিশ্বিকাপ আয়োজক নির্বাচনে আবর্তন নীতির উপর। ২০০৭ সালের এপ্রিলে ব্ল্যাটার আবার বলেন, "এর অর্থ এই যে ২০১৪ সালের পর বিশ্বকাপ এশিয়ায় হবে।"
সংগঠন এবং গণমাধ্যম
১৯৫৪ সালে বিশ্বকাপ প্রথম টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়। বর্তমানে এটি টেলিভিশনে সবচেয়ে জনপ্রিয় অনুষ্ঠান। এমনকি অলিম্পিক গেমসের চেয়েও বেশি মানুষ বিশ্বকাপ দেখে থাকে। ২০০২ বিশ্বকাপের সবগুলো ম্যাচের সর্বমোট দর্শকসংখ্যা ছিল প্রায় ২৮.৮ বিলিয়ন।১.১ বিলিয়ন মানুষ সরাসরি এ বিশ্বকাপের ফাইনাল দেখেছেন যা পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ছয় ভাগের এক ভাগ। ২০০৬ বিশ্বকাপের ড্র, যা বিশ্বকাপে বিভিন্ন দলের গ্রুপ নির্ধারন করে, তা দেখেছেন প্রায় ৩০০ মিলিয়ন দর্শক।
১৯৬৬ সাল থেকে প্রতি বিশ্বকাপের একটি নিজস্ব মাস্কট বা প্রতীক আছে। বিশ্বকাপ উইলি প্রথম বিশ্বকাপ মাস্কট, যা ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপে ব্যবহৃত হয়েছে। ২০০৬ বিশ্বকাপের মাস্কট হচ্ছে গোলিও, একটি সিংহ, এবং পিলি, একটি ফুটবল
সফল জাতীয় দল

সবমিলিয়ে মোট ৭৮টি দেশ কমপক্ষে একটি বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলেছে। এর মধ্যে ফাইনালে উঠেছে কেবল ১১টি এবং ফাইনালে জিতেছে মাত্র ৮টি দেশ। যে সাতটি দেশ বিশ্বকাপ জিতেছে তারা নিজেদের পোশাকে তারকা ব্যবহার করতে পারে। প্রতিটি তারকা একটি বিশ্বকাপ শিরোপা নির্দেশ করে।
পাঁচটি শিরোপা জিতে ব্রাজিল বিশ্বকাপের সবচেয়ে সফল দল এবং তারাই একমাত্র দল যারা এপর্যন্ত অনুষ্ঠিত সবগুলো বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছেসাম্প্রতিক ২০০৬ বিশ্বকাপের শিরোপাসহ চারটি শিরোপা নিয়ে ইতালি দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। পরপর দুটি বিশ্বকাপ জয় করতে পেরেছে কেবল ব্রাজিল ও ইতালি, এবং প্রত্যেকেই তাদের প্রথম দুটি বিশ্বকাপ এভাবেই জিতেছে (ইতালি: ১৯৩৪ ও ১৯৩৮; ব্রাজিল: ১৯৫৮ ও ১৯৬২)। ১৯৭০ ও ১৯৯৪ সালে ব্রাজিল ও ইতালি যখন ফাইনালে মোকাবিলা করেছে, তখন উভয় দলের সামনে যথাক্রমে প্রথম দল হিসেবে তৃতীয় শিরোপা ও প্রথম দল হিসেবে চতুর্থ শিরোপা লাভের দরজা খোলা ছিল। দুটি ফাইনালেই ব্রাজিল ইতালিকে হারিয়ে দেয় এবং ২০০২ সালে রেকর্ড পঞ্চম শিরোপা জেতে। তারা চারটি মহাদেশে আয়োজিত বিশ্বকাপই জিতেছে (ইউরোপ: ১৯৫৮; দক্ষিণ আমেরিকা: ১৯৬২; উত্তর আমেরিকা: ১৯৭০ ও ১৯৯৪; এশিয়া: ২০০২)। একমাত্র যে আরেকটি দল তাদের মহাদেশের বাইরে আয়োজিত বিশ্বকাপ জিতেছে তারা হচ্ছে আর্জেন্টিনা (১৯৮৬ সালে উত্তর আমেরিকায়)।
যে সব দল পরপর দুটি বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেছে তারা হচ্ছে ইতালি, ব্রাজিল, পশ্চিম জার্মানি, আর্জেন্টিনা, এবং কখনো শিরোপা না জেতা নেদারল্যান্ড। পরপর তিনটি বিশ্বকাপ ফাইনালে খেলা দল হচ্ছে ব্রাজিল (১৯৯৪, ১৯৯৮, ২০০২) ও পশ্চিম জার্মানি (১৯৮২, ১৯৮৬, ১৯৯০)। ব্রাজিল এই তিনটির দুটিতে জিতেছে (১৯৯৪, ২০০২) কিন্তু পশ্চিম জার্মানি কেবল একটিতে জিতেছে। আঠারোটি ফাইনালের মধ্যে কেবল দুবার একই প্রতিপক্ষ ফাইনালে খেলেছে। ব্রাজিল ও ইতালি খেলেছে ১৯৭০ ও ১৯৯৪ সালে, এবং পশ্চিম জার্মানি ও আর্জেন্টিনা খেলেছে ১৯৮৬ ও ১৯৯০ সালে (পশ্চিম জার্মানি ও আর্জেন্টিনাই কেবল পরপর দুটি ফাইনালে পরস্পরের মোকাবিলা করেছে)। প্রতিটি ফাইনাল খেলায় ব্রাজিল, ইতালি, (পশ্চিম) জার্মানি, ও আর্জেন্টিনার একটি দল অন্তত অংশ নিয়েছে।
নিচে যে ২৪টি দল কোন বিশ্বকাপে শীর্ষ চারে স্থান পেয়েছে তাদের তালিকা দেয়া আছে। জার্মানি সর্বোচ্চ ১২ বার শীর্ষ চারে থেকেছে। জার্মানি সর্বোচ্চ ৮বার ফাইনালে খেলেছে।
স্বাগতিকের সাফল্য-ব্যর্থতা
বিশ্বকাপজয়ী আটটি দলের ছয়টি দলই অন্তত একটি বিশ্বকাপ স্বাগতিক দেশ হিসেবে জিতেছে। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হচ্ছে ব্রাজিল ও স্পেন , যারা ১৯৫০ সালে বিশ্বকাপ আয়োজন করেও বিশ্বকাপ জয় করতে পারেনি।
ইংল্যান্ড (১৯৬৬)  ফ্রান্স (১৯৯৮) সালে তাদের একমাত্র বিশ্বকাপ স্বাগতিক হিসেবে জিতেছে। উরুগুয়ে (১৯৩০), ইতালি (১৯৩৪)  আর্জেন্টিনা (১৯৭৮) সালে তাদের প্রথম বিশ্বকাপ ট্রফি স্বাগতিক হিসেবে জিতেছে। জার্মানি (১৯৭৪) তাদের দ্বিতীয় শিরোপা নিজেদের মাটিতে জিতেছে।
অন্যান্য দেশও বিশ্বকাপ আয়োজন করে সাফল্য পেয়েছে। সুইডেন (১৯৫৮ সালে রানার্স-আপ), চিলি (১৯৬২ সালে তৃতীয়), দক্ষিণ কোরিয়া (২০০২ সালে চতুর্থ স্থান), মেক্সিকো (১৯৭০  ১৯৮৬ সালে কোয়ার্টার ফাইনাল) এবং জাপান (২০০২ সালে দ্বিতীয় রাউন্ড) এরা তাদের সেরা সাফল্য স্বাগতিক হিসেবেই পেয়েছে। ২০০৬ পর্যন্ত কোন স্বাগতিক দেশই বিশ্বকাপের প্রথম ধাপ থেকে বাদ পড়েনি। তবে একমাত্র ব্যতিক্রম দক্ষিণ আফ্রিকা। তারা ২০১০ বিশ্বকাপের প্রথম ধাপ থেকেই বাদ পড়ে।
বিভিন্ন মহাদেশের শ্রেষ্ঠ সফলতা
এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সকল বিশ্বকাপের ফাইনলে কেবল ইউরোপীয় এবং দক্ষিণ আমেরিকান দলগুলো অংশ নিয়েছে। দুটি মহাদেশই যথাক্রমে এগারো ও নয়টি শিরোপা জিতেছে। এই দুই মহাদেশের বাইরে কেবল দুটি দলই সেমি-ফাইনালে উঠতে পেরেছে: যুক্তরাষ্ট্র (১৯৩০ সালে) এবং দক্ষিণ কোরিয়া (২০০২ সালে)। সাম্প্রতিককালে আফ্রিকার দলগুলো সফলতা পেলেও তারা কখনো সেমি-ফাইনালে পৌছুতে পারেনি। ওশেনিয়া অঞ্চলের দলগুলো কেবল তিনটি বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছে এবং মাত্র একটিতে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছে।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, ইউরোপীয় দলগুলি তাদের জেতা সবগুলো শিরোপাই উইরোপে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে জিতেছে। ইউরোপীয় দেশগুলোর বাইরে ইউরোপে শিরোপা জিতেছে এমন একমাত্র দেশ হচ্ছে ব্রাজিল, যারা ১৯৫৮ সালে ইউরোপে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে শিরোপা জিতেছে। কেবল দুটি দল পরপর দুবার শিরোপা জিতেছে - ব্রাজিল ১৯৫৮ ও ১৯৬২ সালে এবং ইতালি ১৯৩৪ ও ১৯৩৮ সালে।
পুরস্কার
প্রতিটি বিশ্বকাপ শেষে খেলোয়াড় ও দলের বিশেষ অর্জনের জন্য কিছু পুরস্কার দেয়া হয়। বর্তমানে ছয়টি বিষয়ে পুরস্কার দেয়া হচ্ছে: -
·         এডিডাস সোনালী জুতা শীর্ষ গোলদাতার জন্য (সাধারনভাবে গোল্ডেন শু বা গোল্ডেন বুট নামে পরিচিত, যা প্রথম দেয়া হয় ১৯৩০ বিশ্বকাপে); সর্বসাম্প্রতিককালে, রুপালী জুতা  ব্রোঞ্জ জুতা দেয়া হচ্ছে দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেরা গোলদাতাকে;
·         এডিডাস সোনালী বল শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড়ের জন্য, যা গণমাধ্যম কর্মীদের ভোটের মাধ্যমে নির্ধারিত হয় (গোল্ডেন বল নামে পরিচিত, যা প্রথম দেয়া হয় ১৯৮২ বিশ্বকাপে); রুপালি বল  ব্রোঞ্জ বল দেয়া হয় ভোটে দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেরাদের;
·         ইয়েসিন পুরস্কার শ্রেষ্ঠ গোলরক্ষকের জন্য (প্রথম দেয়া হয় ১৯৯৪ বিশ্বকাপে);
·         ফিফা ফেয়ার প্লে ট্রফি যে দলের ক্রীড়া আচরণ সবচেয়ে ভাল তাদের জন্য (প্রথম দেয়া হয় ১৯৭৮ বিশ্বকাপে);
·         মোস্ট এন্টারটেইনিং টিম যে দলের খেলা দর্শকদের সবচেয়ে আনন্দ দেয় তাদের জন্য, দর্শক ভোটে নির্ধারন করা হয় (প্রথম দেয়া হয় ১৯৯৪ বিশ্বকাপে);
·         জিলেট শ্রেষ্ঠ তরুণ খেলোয়াড় ২১ বছরের কমবয়সী খেলোয়াড়দের মধ্যে সেরা খেলোয়াড়কে দেয়া হয় (প্রথম দেয়া হয় ২০০৬ বিশ্বকাপে).
পূর্ণ-তারকা দল শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড়দের বাছাই করে বিশ্বকাপের শেষে একটি দল ঘোষোনা করা হয়, যেটি ১৯৯৮ বিশ্বকাপ থেকে চালু হয়েছে।
রেকর্ড ও পরিসংখ্যান
দ্রুততম গোল
বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুততম সময়ের গোল হয় মাত্র ১১ সেকেন্ডে। ২০০২ সালে জাপান-কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে তুরস্কের তারকা স্ট্রাইকার হাকান সুকুর খেলা শুরু হওয়ার মাত্র ১১ সেকেন্ডের মাথায় গোল করে হতভম্ব করে দিয়েছিলেন প্রতিপক্ষ দক্ষিণ কোরিয়ার খেলোয়াড়দের। তুরস্কের অন্যতম অভিজ্ঞ এই তারকা ফুটবলারের তাঁর ওই দ্রুততম গোলটির আগে ছয়টি বিশ্বকাপ ম্যাচ খেললেও গোল পাননি তার একটিতেও। ওই ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়াকে ৩-২ গোলে হারিয়ে তৃতীয় স্থানটি দখল করে নেয় তুর্কিরা। এযাবত্কালে বিশ্বকাপে তুরস্কের সেরা সাফল্য ছিল সেটি।
*Did not play but was part of the squad.
ফিফা বিশ্বকাপ বিজয়ী অধিনায়ক ও ম্যানেজার
ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার, পশ্চিম জার্মানি, একমাত্র ব্যক্তি যিনি অধিনায়ক (১৯৭৪) ও কোচ (১৯৯০) হিসবে বিশ্বকাপ জিতেছেন। মারিও জাগালো, ব্রাজিল, একমাত্র ব্যক্তি যিনি চারবার বিশ্বকাপ জিতেছেন, দুইবার খেলোয়াড় হিসেবে (১৯৫৮ ও ১৯৬২), একবার কোচ (১৯৭০) এবং একবার সহকারী কোচ হিসেবে (১৯৯৪)।
বিশ্বকাপের সবচেয়ে বেশির রেকর্ড
·         চূড়ান্ত পর্বে সবচেয়ে বেশি উপস্থিতিব্রাজিল (২১)।
·         সবচেয়ে বেশি শিরোপা জয়ব্রাজিল (৫)।
·         সবচেয়ে বেশি ফাইনাল খেলা দলজার্মানি (৮)।
·         সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা দলজার্মানি (১০৬)।
·         সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জেতা দলজার্মানি (৭৬)।
·         সবচেয়ে বেশি ম্যাচ হারা দলমেক্সিকো (২৫)।
·         সবচেয়ে বেশি ম্যাচ ড্র করা দলইতালি (২১)।
·         সবচেয়ে বেশি গোল করা দলজার্মানি (২২১)।
·         সবচেয়ে বেশি গোল হজম করা দলজার্মানি (১২১)।
·         সবচেয়ে বেশিবার খেলে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে না পারা দলস্কটল্যান্ড (৮)।
·         সবচেয়ে বেশি টানা শিরোপা; ইতালি (১৯৩৪, ১৯৩৮), ব্রাজিল (১৯৫৮, ১৯৬২)।
·         সবচেয়ে বেশি টানা ফাইনাল; (জার্মানি ১৯৮২-১৯৯০), ব্রাজিল (১৯৯৪-২০০২)।
·         সবচেয়ে বেশি টানা জয়১১; ব্রাজিল।
·         সবচেয়ে বেশি ম্যাচে টানা অপরাজিত১৩; ব্রাজিল।
·         সবচেয়ে বেশিবার অংশগ্রহণ৫ বার; আন্তোনিও কারবাজাল (মেক্সিকো, ১৯৫০-১৯৬৬), লোথার ম্যাথাউস (জার্মানি, ১৯৮২-১৯৯৮) ও জিয়ানলুইজি বুফন (ইতালি, ১৯৯৮-২০১৪)।
·         ৩ বার বিশ্বকাপ জেতা একমাত্র ফুটবলারপেলে (১৯৫৮, ১৯৬২ ও ১৯৭০)।
·         সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা ফুটবলারলোথার ম্যাথাউস (জার্মানি, ২৫ ম্যাচ)।
·         সবচেয়ে বেশি সময় খেলা২২১৭ মিনিট; পাওলো মালদিনি (ইতালি)।
·         সবচেয়ে বেশি ফাইনালে উপস্থিতি৩ বার (কাফু, ব্রাজিল ১৯৯৪-২০০২)।
·         সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা অধিনায়কডিয়েগো ম্যারাডোনা (১৬ ম্যাচ)।
·         বদলি ফুটবলার হিসেবে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা ফুটবলারডেনিলসন (ব্রাজিল, ১১ ম্যাচ)।
·         দুবার বিশ্বকাপ জেতা কোচভিত্তরিও পোজ্জো (ইতালি, ১৯৩৪ ও ১৯৩৮)।
·         কোচ হিসেবে সবচেয়ে বেশি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ, কার্লোস আলবার্তো পাহেইরা (কুয়েত ১৯৮২, আরব আমিরাত ১৯৯০, ব্রাজিল ১৯৯৪ ও ২০০৬, সৌদি আরব ১৯৯৮, দক্ষিণ আফ্রিকা ২০১০)।
·         বিশ্বকাপে পাঁচটি ভিন্ন দেশের কোচবোরা মিলুটিনোভিচ (মেক্সিকো ১৯৮৬, কোস্টারিকা ১৯৯০, যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৪, নাইজেরিয়া ১৯৯৮, চীন ২০০২)। কার্লোস আলবার্তো পাহেইরা (কুয়েত ১৯৮২, আরব আমিরাত ১৯৯০, ব্রাজিল ১৯৯৪ ও ২০০৬, সৌদি আরব ১৯৯৮, দক্ষিণ আফ্রিকা ২০১০)।
·         সবচেয়ে বেশি বয়সী কোচঅটো রেহেগাল (৭১ বছর ৩১৭ দিন, গ্রিস ২০১০)।
·         খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে টুর্নামেন্ট জয়মারিও জাগালো (ব্রাজিল, ১৯৫৮ ও ১৯৬২ খেলোয়াড়, ১৯৭০ কোচ) ও ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার (জার্মানি, ১৯৭৪ খেলোয়াড়, ১৯৯০ কোচ)।


No comments

Theme images by TommyIX. Powered by Blogger.